বর্তমানে ধানের জমিতে খুবই কমন একটি রোগ হচ্ছে ব্লাষ্ট । এটি ছত্রাকজনিত রোগ। এটি ধান গাছের জীবন চক্রে সাধারণত তিন পর্যায়ে কিংবা তিন স্থানে হয়।
প্রথমেই এটির প্রাথমিক লক্ষ্মণ দেখা যায় কচি ধানের পাতায় ,এটিকে বলা হয় লিফ ব্লাষ্ট । যার কারণে গাছে সালোকসংশ্লেষন ব্যাঘাত ঘটায় এবং অনেক সময় পর্যাপ্ত খাবার তৈরির অভাবে সঠিকভাবে ধান গাছ বেড়ে উঠতে ব্যাঘাত ঘটায়।
তাছাড়া পরবর্তীতে ধানের গিটে হয়ে আক্রান্ত থাকে, আক্রান্ত স্থানটি কালো এবং দুর্বল হয়ে যায়, ফলে হালকা ঝড়ে ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। সর্বশেষ এটি দেখা যায় ধানের শীষের গোড়ায় আক্রান্ত স্থানটি কালো হয়ে যায়। ফলে ধানের দানায় পর্যাপ্ত খাবার যেতে না পারায় ধানটি চিটা এবং ঝরে পরে যায়। এটিকে বলা হয় নেক ব ব্লাষ্ট ।যার ক্ষতি সর্বোচ্চ। ব্লাষ্ট এর লক্ষ্মণ দেখা দিলে কৃষি অফিসের কৃষিবিদদে মতে কৃষকদের করণীয়:
১. জমিতে ৩/৪ সেঃমি পানি ধরে রাখা।
২. ইউরিয়া সার প্রয়োগ সাময়িক বন্ধ রাখা
৩. বিঘা প্রতি (৩৩ শতাংশের জন্য) অতিরিক্ত ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ।
৪. নিম্নের যেকোন একটি অনুমোদিত ছত্রাক নাশকের সঠিক ডোজে স্প্রে করা:
নাটিভো ৬ গ্রাম /১০ লিটার পানিতে / ৫ শতাংশের জন্যে
ট্রুপার ৮ গ্রাম/ ১০ লিটার পানিতে / ৫ শতাংশের জন্যে
ফিলিয়া ২০ মিলি/ ১০ লিটার পানিতে / ৫ শতাংশের জন্যে
সেলটিমা ২০ মিলি/ ১০ লিটার পানিতে / ৫ শতাংশের জন্যে
পাতায় ব্লাষ্টের লক্ষ্মণ দেখা দিলেই দেরী না করে উল্লেখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা
৫. ধানের অধিক পুষ্ট এবং ব্লাষ্টের ক্ষতি থেকে রক্ষায় ধানের থোড় অবস্থায় ১০ লিটার পানিতে / ৫ শতাংশের জন্যে
৬০ গ্রাম পটাশ+ ৬০ গ্রাম সালফার (থিওভিট/সালফক্স) স্প্রে করা।
ভেজাল ঔষধ চিহ্নিত করতে পারলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসে অভিযোগ করা।
কচুয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসান বিভাগের কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম লিটন উল্লেখিত বিষয় সঠিকভাবে মেনে ধানের চাষ করতে ভাল ফলনের জন্য নিয়মগুলি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন।
ছবি: ধানে ব্লাষ্টের বিভিন্ন পর্যায়ের একাংশ
Leave a Reply