রাজধানীতে ব্যয়বহুল নতুন হলুদ ট্যাক্সি ক্যাব সার্ভিসের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নতুন ট্যাক্সি ক্যাবের প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া ১০০ টাকার পরিবর্তে ৮৫ টাকা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি গলফ ক্লাবে আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের আওতায় ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসেস-এর এই ট্যাক্সি ক্যাব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
গত ২৩ মার্চ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে নতুন ট্যাক্সি ক্যাবের জন্য প্রথম ২ কিলোমিটার ১০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি কিলোমিটার ৩৪ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। যা আগে ছিল ৬০ টাকা এবং ১৫ টাকা। এর ফলে এবার যাত্রীদের কয়েকগুন বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে।
তবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভাড়া কমানো কথা শুনলে জনগণ এই ট্যাক্সিক্যাব ব্যবহার শুরু করবে। অপরদিকে ভাড়া ১০/১৫ টাকা কমানো হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর লোকসান হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “জনগণ নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া দিতে প্রস্তুত রয়েছে।”
অথচ প্রতিনিয়ত যেখানে নগরবাসী যানজট এবং বাস স্বল্পতায় নাকাল হচ্ছে। বেলা শেষে বাস না পাওয়ার ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। তাই বাসের সুযোগ না বাড়িয়ে ব্যয়বহুল এ ট্যাক্সি ক্যাব সার্ভিস নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “নতুন ট্যাক্সিতে সাধারণ যাত্রীদের কোনো লাভ হবে না। অনর্থক বিলাসী আয়োজন বন্ধ করে ঢাকায় আরো বড় বড় বাস চালু করা প্রয়োজন।”
নতুন এ ট্যাক্সি ক্যাবের নির্ধারিত ভাড়ার হিসাব কষলে দেখা যায়, এ ট্যাক্সিতে আব্দুল্লাহপুর থেকে মতিঝিল যেতেই ৭৮০ টাকা ভাড়া গুনতে হবে। আর কেউ মিরপুর-১০ থেকে মতিঝিল গেলে দিতে হবে ৫৮০ টাকা। যাত্রা বিরতির সময় প্রতি ২ মিনিটের জন্য সাড়ে ৮ টাকা করে ভাড়া গুনতে হবে।
আর যানজটের এ শহরে যানজট বা অন্য কোনো কারণে পথে ৮ মিনিট আটকে থাকলে যাত্রীকে এক কিলোমিটারের ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, “অতীতে গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণে বিআরটিএ যেভাবে স্বেচ্ছাচারিতা করেছে, ট্যাক্সির বেলায়ও তা-ই করেছে।”
এদিকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “রাজধানী ঢাকাকে যানজটমুক্ত ও আধুনিক মহানগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার সরকার ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে বর্তমান এসটিডির আওতায় ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কম্যুটার রেলওয়ে, ভূগর্ভস্থ টানেল, ঢাকা শহরের চারিদিকে রিং রোড ও ওয়াটারওয়ে নির্মাণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।”
ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসেস প্রাথমিকভাবে টয়োটা ব্রান্ডের জাপানে নির্মিত ১৫০০ সিসি’র ২৭টি টেক্সিক্যাব পরিচালনা করবে। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা টমা গ্রুপ একই ব্রান্ডের ১৯টি টেক্সি ক্যাব পরিচালনা করবে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সর্বমোট ৬শ’ গাড়ী পরিচালনা করবে দুই প্রতিষ্ঠান।
Leave a Reply