ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন মার্চে হওয়ার সম্ভাবনা
নিজস্ব সংবাদদাতা : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবার ধাপে ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে সংস্থাটি। এ ক্ষেত্রে মার্চের প্রথমার্ধে শুরু হতে পারে এ নির্বাচন।ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জানুয়ারির শেষের দিকে তফসিল ঘোষনা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রথম ধাপের ভোট মার্চে শুরু দিকে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে গতবার কোন উপজেলায় কবে ভোট হয়েছে, কবে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রভৃতি তথ্য দিতে বলেছে সংস্থাটি।ইসি কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা পরিষদ পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় ৪৮৮টি উপজেলা পরিষদের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ৪৫৫টির নির্বাচন যথাযথ সময়ে, পরবর্তী সময়ে অন্যগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।ওই বছর ১০ মার্চ প্রথম ধাপে ৮২টি, ১৮ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে ১২৩টি, ২৪ মার্চ তৃতীয় ধাপে ১২২টি, ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপে ১০৬টি এবং ১৮ জুন পঞ্চম ধাপে ২২টি উপজেলায় ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। দেশে বর্তমানে উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ হচ্ছে প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। আর নির্বাচন করতে হয় মেয়াদপূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে। যেহেতু পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই শপথও হয়েছে পাঁচ বা তার বেশি ধাপে। কাজেই কয়েক ধাপেই শেষ হবে উপজেলাগুলোর মেয়াদ। আর সে অনুযায়ী ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় গণনা হয়।এদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ইসির মাঠ কর্মকর্তাদেরও একই তথ্য দিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। এ-সংক্রান্ত চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকদেরও।নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮-এর ১৭(১) (গ) ধারা অনুসারে পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে, ওই মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ পর্যন্ত পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের শপথ গ্রহণ ও প্রথম সভার তারিখের তথ্য পাঠানোর জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।জানা গেছে, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে সে সময় বিজয়ীদের শপথ ২০১৯ সালের মার্চেই হয়েছে। অন্য ধাপেরগুলো পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে এপ্রিল ও মে মাসে। সে হিসেবে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় গণনা ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।এ বিষয়ে ইসির সুত্রে জানা গেছে চলতি মাসের শেষের দিকে উপজেলার প্রথম ধাপের নির্বাচনের তফসিল হতে পারে। তবে তফসিল ও ভোট কখন হবে, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে নির্বাচন কমিশন।১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে প্রথমবার, ১৯৯০ সালে দ্বিতীয়বার ও ২০০৯ সালে তৃতীয়বার, ২০১৪ সালে চতুর্থবার, ২০১৯ সালে পঞ্চমবার উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচনে ১৪টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও ট্যাব ব্যবহার করা হয়েছিল। র্দলীয়ভাবে নির্বাচন হলেও দলীয় সমর্থনে ভোট হয়। এতে শতাধিক ব্যক্তি সহিংসতায় প্রাণ হারান।পঞ্চম ধাপের ভোট শেষে ওই বছর ৩১ মার্চ আবদুল মোবারক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রথম নির্বাচনে বড় দলগুলো দলীয়ভাবে হওয়ার বিরোধিতা করেছে। এখন তারা আবার দলীয়ভাবে নির্বাচন চাচ্ছে। যদি এমনই চেয়ে থাকেন, তবে আইনের মধ্যে ব্যবস্থা করলে আরও ভালো হতো। আশা করি ভবিষ্যতে তারা আইন প্রণয়ন করবেন, তারা এ নিয়ে ভাববেন। কারণ এতে অনেক হানাহানি হয়, প্রাণহানি হয়। নির্বাচন স্থগিত হলে আবার নির্বাচন করতে হয়।তিনি বলেন, যারা জনমত গঠন করেন, আপনারা এ নিয়ে ভাবুন। এবারের নির্বাচন কোনোমতে পার করে দেয়া হলো। আগামী নির্বাচনে যেন এ নিয়ে বিভ্রান্তি না হয়।পরবর্তী সময়ে দশম জাতীয় সংসদেই স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে সম্পন্ন করার আইন হয়। ২০১৬ সাল থেকে স্থানীয় নির্বাচন দলীয় প্রতীকে শুরু হয়।
Leave a Reply