অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার নভেল করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বন্ধকে সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিওএইচও)। তবে একইসঙ্গে গবেষকদের হতাশ না হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন জেনেভায় ডাব্লিওএইচও’রপ্রধান কার্যালয়ে ১০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল আপাতত স্থগিত রেখেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ‘এটা একটা ওয়েক আপ কল। আমাদের বুঝতে হবে যে ক্লিনিক্যাল ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে সাফল্য ও ব্যর্থতা থাকবেই; এবং এর জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’এদিকে ভারতেও স্থগিত হয়ে গেছে করোনাভাইরাসের অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’-এর ট্রায়াল। সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।এক স্বেচ্ছাসেবক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল স্থগিত রেখেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এ ঘটনাকে সতর্কবাতা বলে ব্যাখ্যা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে এর জন্য গবেষকরা যাতে হতাশ হয়ে না পড়েন সে বার্তাও দেওয়া হয়েছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন গতকাল জেনেভায় প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা ঘটবেই। আমাদের হতাশ হলে চলবে না।’এদিকে সরকারি নোটিশের পর ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করে ‘কোভিশিল্ড’ তৈরিতে ভারতীয় পার্টনার সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। অ্যাস্ট্রাজেনেকা পুনরায় টিকার ট্রায়াল শুরুনা করা পর্যন্ত ভারতেও তা বন্ধ থাকবে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট। অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিশিল্ডের ট্রায়াল বন্ধ করার পরও পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ট্রায়াল চালিয়ে যাওয়ায় গতকাল তাদের নোটিশ পাঠায় দেশের সেন্ট্রাল ড্রাগ রেগুলেটর বা ঔষধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় অক্সফোর্ডের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মানবশরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ আপাতত বন্ধ রেখেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। কিন্তু, ভারতের ১৭টি স্থানে তারপরও ট্রায়াল চালিয়ে যায় পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। এ বিষয়ে নোটিশ পাঠিয়ে তাদের কাছে জবাবদিহি চায় সেন্ট্রাল ড্রাগ রেগুলেটর।ভ্যাকসিনের বিষয়ে ডাব্লিওএইচও আপত্কালীন পরিস্থিতির প্রধান মাইক রায়ান জানিয়েছেন, ‘এ প্রতিযোগিতা ভাইরাসের বিরুদ্ধে। এ প্রতিযোগিতা জীবন বাঁচানোর জন্য। কে আগে ভ্যাকসিন বাজারে আনতে পারবে, তার জন্য এটা কয়েকটি কোম্পানি বা কয়েকটি দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা নয়।’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারা বিশ্বের প্রায় দুই কোটি ৮০ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
এর আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকার মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘অক্সফোর্ড করোনাভাইরাস টিকার বিশ্বব্যাপী ট্রায়ালের পর্যালোচনা প্রক্রিয়া চলাকালীন সুরক্ষার কারণে এক স্বাধীন কমিটি আপাতত ট্রায়াল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ট্রায়ালের সময় একজনের মধ্যে ব্যাখ্যা করা যায় না এমন অসুস্থতা দেখা দেওয়ায় রুটিন প্রক্রিয়া হিসেবে সবদিক খতিয়ে দেখার জন্য আপাতত ট্রায়াল বন্ধ রাখা হয়েছে।’বড়ট্রায়ালগুলোর ক্ষেত্রে অনেক সময় এমন অসুস্থতা আসতে পারে, তবে তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন অ্যাস্ট্রাজেনেকার মুখপাত্র। তবে যে স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়েছেন, তিনি এখন কোথায় আছেন এবং তাঁর অবস্থা কতটা গুরুতর, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
সুত্র: দৈনিকজনকন্ঠ অনলাইন সংস্করণ
Leave a Reply