কচুয়ায় মন্দিরে প্রবিত্র কোরআন শরীফ রেখে মানুষকে ধোকা দিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ও কোরআন শরীফ অবমাননা করার ঘটনা ঘটেছে।উপজেলার দেয়াটি সঞ্জয় সরকারের বাড়ির লোকনাথ মন্দিরে এঘনা ঘটে।উপজেলার পুর্ব সহদেবপুর এলাকার দেয়াটি সরকার বাড়ির মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে ২৯ সেপ্টেম্বর স্থনীয়রা বিষযটি জানতে পেরে ৩ খানা কোরআন শরীফ ্উদ্বার করে। লোকনাথ মন্দিরে মুর্র্তির পাশে পবিত্র কোরআন শরীফ রেখে এবং দেয়ালে মক্কা শরীফ,রওজা শরীফ,মদীনা শরীফের ছবি টানিয়ে রাখা হয়। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারন মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওসি থানার এস আই নাসির উদ্দিনকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। এস আই নাসির ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে কথিত এ পীরের লোকনাথ মন্দিরে আসেন এবং ভন্ড এ পীরকে কোরআন শরীফের কথা জিজ্ঞাসাবাদে মন্দিরে কোরআন শরীফের কথা স্বীকার করেন।এ সময় ৩ খানা কোরআন শরীফ, দেয়ালের মক্কা শরীফ,রওজা শরীফ,মদীনা শরীফের ছবি উদ্বার করা হয় ।
৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার পূর্ব সহদেবপুর ইউনিয়নের দোয়াটি গ্রামে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। ভন্ড সঞ্জয় সরকারকে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবীতে ২ অক্টোবর শুক্রবার জুম্মা নামাজ শেষে দোয়াটিসহ আশপাশের গ্রামের মসজিদের মুসল্লিগন আওয়ামীলীগ নেতা জাকির হোসেনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তাকে গ্রেফতার পূর্বক শাস্তির দাবীতে শুক্রবার ২ অক্টেবর দোয়াটি গ্রামে ২০ সদস্য কমিটি গঠন করে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার গ্রেফতারের দাবি জানান হয়।বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার দহুলিয়ার শাজুলিয়া দরবার শরীফের পীরজাদা মাওলানা শাহ মুহাম্মদ রুহুল্লাহ শাজুলির সভপতিত্বে দেয়াটি কেআইডিপি অফিসের সামনে এলাকার জনগনের সমন্বয়ে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয় ।সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান,থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইব্রহীম খলিল,উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ফনী ভ’ষন মজুমদার,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ইমাম হোসেন সোহাগ প্রমূখ। উপস্থিত সবাই ভন্ড সঞ্জয় সরকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। সভা সমাবেশের পর এলাকার মানুষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেছে। জানা গেছে ৩ সেপ্টেম্বর রাতে পাশ্ববর্তী মনপুরা ,বাতাবাড়িয়া এলাকা থেকে দল বেধে লোকজন দোয়াটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় । সংবাদ পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান,থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইব্রহীম খলিল দোয়াটি ছুটে যান । সঞ্জয় সরকারকে শনিবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় বলে থানা সুত্রে জানা যায়। তাছাড়া শনিবার রাতে দক্ষিন বাছাইয়া কালি মন্দিরে একদল লোক হামলা চালিয়ে মন্দিরের ক্ষতি সাধন করে বলে জানা যায় ।
প্রসংগত দোয়াটি গ্রামের কথিত ভন্ড পীর ও লোকনাথ শ্রী সঞ্জয় সরকার ওরফে বাবা মনি লোকনাথ মন্দিরে মুর্তির পাশে পবিত্র কোরআন শরীফ রেখে এবং দেয়ালে মক্কা শরীফ,রওজা শরীফ,মদীনা শরীফের ছবি টানিয়ে ইসলাম ধর্ম, হিন্দু ধর্ম,বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রীষ্টান ধর্ম ৪ ধর্মের ্র প্রচারক ও মহামানব দাবী করে। তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার পূর্ব সহদেবপুর ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের দোয়াটি গ্রামে। তার পিতার নাম-অনিল সরকার।২০১০ সাল থেকে তার এ ভন্ড পীরের সুত্রপাত হয়। তার গ্রামে বসতঘরের পাশে প্রায় ১২ শতক জায়গার ২ শতক জমির মধ্যে ২০লাখ টাকা ব্যায়ে একটি লোকনাথ মন্দির স্থাপন করেন। বিগত ৫বছর যাবৎ কোরআন শরীফ মন্দিরের মুর্র্তির সাথে রেখে ও ভন্ডামী চালিয়ে আসছে মন্দিরের ভিতরে। লোকনাথসহ হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন মুর্র্তির সাথে ৩টি পবিত্র কোরআন শরীফ, দেয়ালে পবিত্র মক্কা শরীফের ছবি, রওজা শরীফের ও মদীনা শরীফের ছবি টানিয়ে ইসলাম ধর্মের লোকজনকে আকৃষ্ট করেছে। আর বলেছে এ কোরআন শরীফ পীর অলিরা তার ওপর সোয়ার হয়ে পাঠ করেন। ভন্ড এ পীর সঞ্জয় ওরফে বাবা মনি বলেন, লোকনাথ মন্দিরে ইসলাম ধর্ম, হিন্দু ধর্ম,বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রীষ্টান ধর্ম ৪ ধর্মের পীর অলিরা তার শরীরের আশ্রয় নিয়ে সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ইসলাম ধর্ম, খ্রীষ্টান ধর্ম এবং শুক্রবারে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হিন্দু ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারকারী হিসেবে ৪ ধর্মের পীর অলিরা ধর্ম প্রচারের দায়িত্ব দেন। সে মোতাবেক লোকদের নিয়ে ঢোল, বাদ্য, যন্ত্র নিয়ে মজনা বানিয়ে লোকনাথ মন্দিরে গান করেন ও ধর্ম প্রচার করেন। এ মজমায় নিং সন্তান মা সন্তান পাবে,পঙ্গু মানুষ ভাল হবে, অন্ধ মানুষ তার দৃষ্টি ফিরে পাবে। এছাড়াও বিভিন্ন রোগ বালাই ভাল হয়ে যাবে বলে পানিপড়া, তেল পড়া,সুতা পড়া দেন কথিত এ ধর্ম প্রচারক পীর।
জানাযায়, সোম ও শুক্রবারে ধর্ম প্রচারক কথিত পীরের শরীরের যখন পীর ও লোকনাথ আশ্রয় করে তখন কথিত এ পীর ও লোকনাথ সবাইকে তুই করে বলে সম্বোধন করে বলেন, এ তোর ভাল হতে হলে ,হাস, মুরগী,শাখা,কাপড়,পাডা ছাগল এ দরবারে দিতে হবে। এভাবে বিগত ৫ বছর যাবৎ সাধারন মানুষকে ধোকা দিয়ে ও ধর্ম ব্যাবসা চালিয়ে আসছে। তার সহযোগী হিসেবে তার বাবা অনিল সরকার, মা পুস্প রানীসহ ডজন খানেক বাহিনী রয়েছে। কেউ কথিত এ ভন্ড পীরের নিকট আসার পর তাদের নিকট থেকে বিস্তারিত সমস্যা জেনে নিয়ে কয়েকদিন পর বা আগামী সোমবার বা শুক্রবারে আসতে পরামর্শ দেয় ঐ তারিখে যখন কথিত পীরের ওপর পীর বা লোকনাথ আশ্রয় নেয় তখন সব কিছু বলে দিতে পারে সাধারন মানুষতো মনে করে হুজুরতো সবই জানে । মূল বিষয় হলো কয়েকদিন আগে আসার পর ঐ সময়ইতো সব কিছু ভন্ড পীরের লোকজন জেনে নিয়েছে। এভাবেই সাধারন মানুষকে প্রতারনা করে মানুষকে ঠকিয়েছে।
বিষয়টি কচুয়ার আলেম সমাজসহ মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বইছে।
Leave a Reply