২১ শে ফেব্রুয়ারী চেতনা। আমাদের গৌরবময় ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরনে আমরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে।ভাষা শহীদদের বিন¤্র শ্রদ্ধা জানাই।
আমাদের বাঙ্গালী জাতি, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ এবং বিশ্বের সকল ভাষার মানুষের ভাষার মর্যাদা আর অধিকারের সার্বজনীন স্বীকৃতির দিন হিসেবে ঘোষিত এ দিবসটি আমাদের বাঙ্গালীদের তথা এই বীরের জাতির জন্য এক অনন্য স্বীকৃতির দিন। তাই এই দিবসটি একদিকে আমাদের মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের সংগ্রামে, আমাদের ভাই হারানোর শোকাবহ দিবস। আরেক দিকে বিশ্বের সকল মাতৃভাষার অধিকার রক্ষা এবং স্বীকৃতি দানের জন্য জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে, আমাদের জাতীয় জীবনের এই অনন্য দিবসটি তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এভাবেই এই দিবসটি আমাদের বাঙ্গালী জাতির ললাটে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে গৌরবের মালা পরিয়ে দিয়েছে। তাই ২১ শে ফেব্রুয়ারী আমাদের আনন্দের দিনও।
এ বছর আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী উদযাপনের বছর। তাই এবারের এই মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য ভিন্ন রকমের। গত ৫০ বছর আমাদের জাতীয় জীবনে আমাদের চেতনার মৌলিক যায়গা গুলো- গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা আর বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের জায়গাগোলতে- অনেক ভাবে অনেক রকম পরিবর্তন পরিবর্ধনের কারনে আমাদের জাতীর হৃদয়ে অনেক রক্তক্ষরন ঘটেছে। এসবের মধ্যেও আমরা বার বার আমাদের মৌলিক জায়গা গুলো যেমন, গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা আর বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের প্রেরনা সমন্বিতভাবে যে শক্তির বলে আমরা- ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গন অভ্যুত্থান, ১৯৭০ এর নির্বাচন, ১৯৭১ এর জাতির পিতা কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষনা সহ মুক্তি যুদ্ধ সংগঠের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বরের বিজয় অর্জন, ১৯৯১ এর স্বৈরাচারের পতনের মত সকল অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলো, সেই অমিয় শক্তির বলে বলিয়ান হয়ে, বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তোলার সংগ্রামে নিজেদের নিয়োজিত করার জন্য, এখন আমাদের জাতি হিসাবে প্রথম করনীয় হিসাবে স্থির করতে হবে।
যে “একুশে” আমাদের সকল মৌলিক স্বত্বার স্ফুরনের সূতিকাগার, সেই “একুশে” কে বিশ্ব দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব মনে করতে হবে। তার জন্য বাংলা ভাষার ব্যাবহারে আমাদের আন্তরিকতা আর স্বদিচ্ছা এখন সময়ের দাবীতে পরিনত হয়েছে। আমাদের এ প্রজন্মের একটি অংশের মধ্যে, ভাষা হিসেবে বাংলাকে ব্যাবহার করার ক্ষেত্রে এক ধরনের অনিহা পরিলক্ষিত হচ্ছে। যা আমাদের জাতি স্বত্বার শক্তিতে বলিয়ান হয়ে, আমাদের গৌরবের বাংলা ভাষাকে নিয়ে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাব। তাই আমাদের সবার, স্ব-স্ব জায়গা থেকে এবং সমষ্টিগত ভাবে, আমাদের নিজের, পূর্ব পুরুষদের রক্তে কেনা বাংলা ভাষার ব্যাবহারে আন্তরিক এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ববান হতে হবে। আর এর মাধ্যমেই, আমাদের মহান ভাষা শহীদদের পবিত্র আত্মার প্রতি যথাযথ সম্নান প্রদর্শন করা সম্ভব।
মহান ভাষা শহীদ এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকল শহীদ এবং যোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়েই বলছি, এ দিবসটিকে শুধুমাত্র একটি দিবস হিসেবে গন্য না করে, এর আবেদনকে চিরভাস্বর করে রাখার জন্য আমাদের হৃদয়ের গভীরে একটু জায়গা করে নেই- যেখানে থাকবে না কোনও কৃত্রিমতা, আর ভাষার বিকৃতির মত কোনও হীন চিন্তা।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ।
লায়ন এমএম ফজলে কাদের মুকুল
শিক্ষাকর্মী ও চেয়ারম্যান,
চাঁদপুর এম এ খালেক মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ
সহ সভাপতি, কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ
কচুয়া, চাঁদপুর।
Leave a Reply