পরে কারাগারের বাইরে এসে জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির সাংবদিকদের বলেন, রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে একই সঙ্গে দুই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রক্রিয়া শেষ হয়।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং সাম্প্রদায়িক হত্যা-নির্যাতনের দায়ে মৃত্যুদণ্ড হয় মুজাহিদের।
আর রাউজানে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নূতন চন্দ্র সিংহ, সুলতানপুর ও ঊনসত্তরপাড়ায় হিন্দু বসতিতে গণহত্যা এবং হাটহাজারীর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজাফফর ও তার ছেলে শেখ আলমগীরকে অপহরণ করে খুনের দায়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় আসে।
সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের রিভিউ খারিজ হওয়ার পর দুই যুদ্ধাপরাধীর প্রাণভিক্ষার আবেদনও নাকচ হয়ে যায়। এরপর পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ শেষে কার্যকর করা হয় তাদের মৃত্যুদণ্ড।
একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করলেও স্বাধীন বাংলাদেশে তারা দুইজনেই মন্ত্রী হয়েছিলেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী ছিলেন মুজাহিদ। আর সাকা চৌধুরী আশির দশকে এরশাদের শাসনামলে বিভিন্ন সময়ে ত্রাণ ও পুনর্বাসন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
এই দুজনের সর্বশেষ দেখা হয় ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায়। ওইদিনই মুজাহিদের সর্বোচ্চ সাজার রায় দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল।
সেদিন দুই দফায় হাজতখানায় দীর্ঘসময় কথা হয় এই দুই শরিক নেতার। সকালে মুজাহিদকে বেশ হাসিখুশি দেখালেও রায়ের পর বিমর্ষ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। রায়ের পর হাজতখানায় সাকার সঙ্গে করমর্দন করেই তিনি বিদায় নিয়েছিলেন।
সেইদিনের পর আদালতের নিয়ম অনুসারে মুজাহিদকে আর যুদ্ধাপরাধের বিচারে হাজির করা হয়নি। ফলে একসঙ্গে ফাঁসিকাষ্ঠে যাওয়ার আগে তাদের আর দেখা হওয়ারও সুযোগ ছিল না।
Leave a Reply