৭৯ রানের জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনা আরেকটু উজ্জ্বল হয়েছে তাদের। এই জয়ে আইসিসি র্যাংঙ্কিংয়ের সাত নম্বরে ওঠা নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুই বল বাকি থাকতে ৩০৭ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে এটাই তাদের সর্বোচ্চ রান। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে একই মাঠে ৬ উইকেটে করা ২৯৬ ছিল আগের সর্বোচ্চ।
জবাবে ৪৬ ওভারে ২২৮ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত।
শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে রোহিত শর্মার ৯৫ রানের জুটিতে শুরুটা ভালো হয় ভারতের। অবশ্য মুশফিকুর রহিম ১৩ ও ১৫ রানে ধাওয়ানকে দুই বার জীবন না দিলে এত বড় হত না অতিথিদের উদ্বোধনী জুটি।
তাসকিন আহমেদের বলে ধাওয়ানের গ্লাভস ছুঁয়ে আসা বল গ্লাভসবন্দি করে তৃতীয় প্রচেষ্টায় সফল হন মুশফিক। তাতেই ভাঙে ১৬ ওভার স্থায়ী জুটি। পরের ওভারে বিরাট কোহলিকে মুশফিকের গ্লাভসে জমা করে অতিথিদের বড় একটা ধাক্কা দেন তাসকিন।
ধাওয়ান, কোহলির দ্রুত বিদায়ের পর রানের জন্য ঘাম ঝরাতে হয় ভারতের ব্যাটসম্যানদের। সেই চেষ্টা করতে গিয়ে রোহিতের বিদায়ে চাপ আরও বাড়ে অতিথিদের।
প্রথম ওয়ানডে উইকেট নিতে রোহিতকে মাশরাফির ক্যাচে পরিণত করেন তরুণ মুস্তাফিজ। অভিষিক্ত এই বাঁহাতি পেসারের বল বুঝতে পারেননি ৬৩ রান করা রোহিত।
পরের ওভারে আবার আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। তার স্লোয়ারে ফিরে যান অজিঙ্কা রাহানে। লাফিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরা নাসির হোসেনের অবদান তাতে কম নয়।
রান নিতে গিয়ে বোলার মুস্তাফিজকে ধাক্কা দেওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনি বেশিক্ষণ টেকেননি। বোলিংয়ে এসেই তাকে বিদায় করেন সাকিব আল হাসান। ধোনির ব্যাট ছুঁয়ে আসা বল মুশফিকের গ্লাভসে জমা পড়তেই গর্জে উঠে গ্যালারির সব দর্শক।
বিনা উইকেটে ৯৫ থেকে ১২৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া ভারত তাকিয়ে ছিল সুরেশ রায়না ও রবিন্দ্র জাদেজার দিকে। তাদের ৬০ রানের জুটিতে লড়াইয়ে থাকে অতিথিরা।
বিপজ্জনক হয়ে উঠা ষষ্ঠ উইকেট জুটি ভাঙার কৃতিত্ব মুস্তাফিজের। পাওয়ার প্লের তৃতীয় ওভারে (৩৭) বোলিংয়ে এসে পরপর দুই বলে রায়না ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ফেরান তিনি। তার হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন ভুবনেশ্বর কুমার।
বোল্ড হন বিপজ্জনক রায়না আর অশ্বিন মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন। পরের ওভারে ফিরে জাদেজাকে সৌম্য সরকারের ক্যাচে পরিণত করে নিজের পঞ্চম উইকেট নেন মুস্তাফিজ। নিজের শেষ ওভারে মোহিত শর্মার ক্যাচ না ছাড়লে বিশ্বের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেকে ছয় উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখাতে পারতেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত ৫০ রানে ৫ উইকেট নেওয়া মুস্তাফিজই বাংলাদেশের সেরা বোলার।
অধিনায়ক মাশরাফির বলে মোহিত শর্মার বল গ্লাভসবন্দি করে পঞ্চম ডিসমিসালেল কৃতিত্ব দেখান মুশফিক। এরপর সাকিব উমেশ যাদবকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেললে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের চতুর্থ জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
Leave a Reply