এই আদেশ পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জরুরি অবস্থার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের করা এই মামলা চ্যালেঞ্জ করে খালেদার রিট আবেদনে সাত বছর আগে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। সে সময় জারি করা রুল খারিজ করেই বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেয়।
এর ফলে খালেদার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচার চালাতে আর কোনো বাধা থাকল না বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন এ মামলাটি অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে।
রায়ের পর খালেদার আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, তারা আপলি করবেন।
অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “ফৌজদারি মামলা নিয়ে রিট আবেদন চলে না। মামলার অনুমোদন সঠিক আছে। এসব কারণে হাই কোর্ট রায় দিয়েছে।”
সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার ‘দুর্নীতি’
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। পরের বছর ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এতে অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই দুর্নীতির এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্ট, সেই সঙ্গে দেওয়া হয় রুল।
মামলা দায়ের কেন আইনগত কর্তৃত্ববর্হিভূত ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়।২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় জামিন পান খালেদা।
প্রায় সাত বছর পর চলতি বছর শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। খালেদার আবেদনে রুলের ওপর শুনানি শুরু হয় ১৯ এপ্রিল। শুনানি শেষে ২৮ মে আদালত রায় অপেক্ষমান রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার আদালত রায় ঘোষণা করে।
খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, রাগীব রউফ চৌধুরী ও এ কে এম এহসানুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল আব্দুর রকিব মন্টু রায়ের সময় উপস্থিত ছিলেন।
নাইকোকে কাজ দিয়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি করার অভিযোগে খালেদার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও একই দিনে আরেকটি মামলা করেছিল দুদক।
Leave a Reply