ভারতের মেঘালয়ে আটক বিএনপি রাজনীতিক সালাহউদ্দিন আহমেদকে আদালতে পেশ করার প্রক্রিয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে যাচ্ছে।
রাজ্য পুলিশ সূত্রে বিবিসিকে জানানো হয়েছে, তিনি ‘পুরোপুরি সুস্থ’ হওয়ার আগে তাকে আদালতে নেওয়া হবে না।
কিন্তু এ ব্যাপারে ডাক্তারদের ছাড়পত্র কবে মিলবে সে ব্যাপারে তারা কিছুই বলতে পারছেন না।
“বিষয়টা এখন আমাদের হাতে নেই, এটা ডাক্তারদের ওপরই নির্ভর করছে”, শিলংয়ে ইস্ট খাসি হিলস থানার পুলিশ সুপার এম খারক্রাং বিবিসিকে বলেন।
মেঘালয়ের রাজধানীর এই থানার অধীনেই মি আহমেদ এখন বন্দি আছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় সালাহউদ্দিন আহমেদ-কে শিলংয়ের সিভিল হাসপাতাল থেকে ‘উন্নত চিকিৎসা’র জন্য সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ‘নেগ্রিমসে’ স্থানাস্তরিত করা হয়।
গত মার্চ মাসে ঢাকায় অপহৃত হওয়ার প্রায় দু’মাস পর ১১ই মে ভারতের শিলংয়ে রহস্যজনকভাবে আবির্ভূত হন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে সে দিনই তার বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৪৬ অনুযায়ী মামলা দায়ের করে পুলিশ, কিন্তু তার দশদিন পর এখনও তাকে সেই মামলায় আদালতে হাজির করা হয়নি।
মি আহমেদের হৃদযন্ত্রের ও কিডনি ঘটিত অল্প কিছু সামাস্য আছে বলে চিকিৎসকরা এর আগে জানিয়েছেন, এবং নেগ্রিমসে বিশেষজ্ঞ কার্ডিওলজিস্ট ও নেফ্রোলজিস্টদের দিয়ে তাঁর জন্য বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে।
ফরেনার্স অ্যাক্টে যার বিরুদ্ধে মামলা ঝুলছে, সেরকম একজন বিচারাধীন বন্দির জন্য চিকিৎসার এই ধরনের আয়োজন ভারতে শুধু বিরল নয়, সম্ভবত নজিরবিহীনও।
মেঘালয় পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে, আসলে তারা চাইছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ এখন যত দিন সম্ভব হাসপাতালেই থাকুন।
দিল্লি থেকে তার ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশ না এলে এই মামলায় যে এখনই খুব একটা অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সেটাও তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
এদিকে সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদসহ তাঁর পরিবারের কয়েকজন বন্ধু-আত্মীয় ও বিএনপির কয়েকজন নেতা গত কয়েকদিন ধরে শিলং-এ আছেন।
মিসেস আহমেদ তাঁর স্বামীর জন্য শিলং হাইকোর্টের একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছেন, স্বামীর সঙ্গে রোজই প্রায় দু’বেলাই তিনি দেখাও করছেন।
কিন্তু মিসেস আহমেদ আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁর স্বামীকে সিঙ্গাপুরের মতো তৃতীয় কোনো দেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার কথা বললেও সেরকম কোনো সম্ভাবনা এখন আদৌ দেখা যাচ্ছে না।
বরং আগামী বেশ কিছুকাল মি. আহমেদকে বিচারাধীন বন্দী হয়ে থাকতে হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
দিল্লিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবি আই, যাদের মাধ্যমে ঢাকার ইন্টারপোল দফতর মি আহমেদের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট নোটিশ পাঠিয়েছে, তারাও বলছেন মি আহমেদ কবে বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন তা এখনই বলা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে আর একজন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ আসামি, নারায়ণগঞ্জ হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত নূর হোসেন যে প্রায় এক বছর হতে চলল ভারতেরই একটি জেলে আটক আছেন সে কথাও তারা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
Leave a Reply