লেবার পার্টির টিউলিপ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
গত নির্বাচনের ফলাফল এবং এবারের ভোটের প্রচারের শুরু থেকেই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস থাকায় ব্রিটিশ গণমাধ্যমের নজর ছিল হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের দিকে।
বৃহস্পতিবার দিনভর ভোটাভুটি শেষে অধিকাংশ আসন থেকে লেবার প্রার্থীদের পরাজয়ের খবর আসতে থাকলেও ১১৩৮ ভোটে ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করেন বাংলার মেয়ে টিউলিপ।
জয়ের পথে টিউলিপ সিদ্দিক পেয়েছেন ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট। আর কনজারভেটিভ পার্টির সায়মন মার্কাস পেয়েছেন ২২ হাজার ৮৩৯ ভোট। এ আসনে এবার ভোট পড়েছে ৬৭.৩ শতাংশ।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ফল ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় টিউলিপ বলেন, “আপনারা যারা আমাকে চেনেন, তারা জানেন যে কঠিন এ কাজের মাত্র শুরু হল।
মা শেখ রেহানা, স্বামী ক্রিস পার্সি, ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, বোন রূপন্তী, রাজনীতিক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে সারা রাত গণনা কেন্দ্রেই ছিলেন তিনি।
সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে টিউলিপ বলেন, “মা, ভাইয়া, রূপী, আম্মুজি… আনোয়ার মামা আর আমার স্বামী… পাঁচ মাস তারা অনেক খেঁটেছেন।”
২০১০ সালের নির্বাচনে এ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে লেবার পার্টিকে ৪২ ভোটের জয় এনে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী গ্লেন্ডা জ্যাকসন। তিনি অবসরে যাওয়ায় এবার দলের মনোনয়ন পান তরুণ রাজনীতিবিদ টিউলিপ।
ভোটের প্রচারণায় বিরোধীপক্ষের অপপ্রচার আর সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ঠিকই জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি।
শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ লন্ডনের মিচামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত এবং সিঙ্গাপুরে।
১৫ বছর বয়স থেকে তিনি হ্যাম্পস্ট্যাড অ্যান্ড কিলবার্নে বসবাস করছেন। এই এলাকায় স্কুলে পড়েছেন ও কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্মেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হওয়া টিউলিপ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গ্রেটার লন্ডন অথরিটি এবং সেইভ দ্য চিলড্রেনের সঙ্গেও কাজ করেছেন। ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি।
টিউলিপ সিদ্দিক হলেন তিন ব্রিটিশ বাংলাদেশির একজন, যারা যুক্তরাজ্যের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
পাঁচবছর আগে প্রথম ব্রিটিশ বাংলাদেশি হিসাবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যান সিলেটের মেয়ে রুশনারা আলী। এবারও তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া লন্ডনের আরেকটি আসন থেকে এবার জয়ী হয়েছেন রূপা হক। তারা তিনজনই লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন।
Leave a Reply