রসধমবং (১)মেহেরুন ময়না : দীর্ঘ ১৩ বছর পর গত মঙ্গলবার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতায় এসেছেন নতুন দুই মেয়র। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে জয়ী হয়েছেন সাঈদ খোকন। আর উত্তর সিটি করপোরেশনে বিজয়ী হয়েছেন ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হক। বিজয়ী হওয়ার পর তাদের মুখে যেমন হাসি ফুটেছে ঠিক সেই হাসি জনগণের মুখে ফোটানোর দায়িত্ব এখন এ দুই নগরপিতার।
প্রায় ২ কোটি মানুষের বসবাস করে রাজধানী ঢাকাতে। কিন্তু এই ঢাকা বর্তমানে এক অসুস্থ নগরীতে পরিণত হয়েছে। রয়েছে নানা সমস্যায় জর্জরিত। জনবহুল এ নগরটির সেবার মান বৃদ্ধি করতে ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর দুই সিটি করপোরেশনকে বিভক্ত করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় সমস্যার পাল্লা দিনদিন ভারী হয়েছে। নগরবাসী সিটি করপোরেশনকে বিভক্ত করার কোনো সুফল পায়নি। তাই দীর্ঘ ১৩ বছর দুই সিটি করপোরেশনের নগরপিতাকে পেয়ে নগরবাসী নগর উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছে। আর সেই স্বপ্ন নগর পিতারাই দেখিয়েছেন। এখন শুধু দুই নগরপিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পালা।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের ইশতেহারের প্রধান প্রতিশ্রুতিগুলো ছিলÑ নগর সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়, আর্থিক সঙ্কট-দুর্নীতি-বেদখল সম্পত্তি উদ্ধার, কমন ইউটিলিটি টানেল নির্মাণ, যানজট নিরসন, রিকশা নিয়ন্ত্রণ, রাস্তায় ময়লার কনটেইনার-ভৌত অবকাঠামো ঠিক করা, খেলার মাঠ ও পার্কের উন্নয়ন-দখলমুক্ত করা এবং নগরবাসীকে মশা আর মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্তি।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেনÑ দুই সিটি করপোরেশনের সরকার সমর্থিত নতুন মেয়র আনিসুল হক ও সাঈদ খোকনের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন অনেকটা সহজ হবে। কারণ সরকার দলীয় হওয়ায় সরকারের সঙ্গে তাদের সক্ষতাও থাকবে। তবে বিষয়গুলো তারা সহজে মোকাবিলা করতে পারলেও নির্ভর করবে অন্যসব দপ্তরগুলোর সহনশীলতার ওপর।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার আশা প্রকাশ করে বলেনÑ যদিও বিতর্কিত নির্বাচন কিন্তু কয়েকজন ভালো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তারা সিটি করপোরেশনের উন্নয়নের দিকে মনযোগী হবেন।
তিনি বলেনÑ আমরা আশা করব তারা সিটি করপোরেশনের উন্নয়নের দিকে নজর দেবেন, দুর্নীতি মুক্ত রাখতে কাজ করবেন। সিটি করপোরেশনকে দলীয় লোকদের প্রতিষ্ঠানে নয়, জনগণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবেন।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের (দক্ষিণ) প্রধাণ নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনসার আলি খান বলেনÑ দুই সিটি করপোরেশনের দুই নয়া নগরপিতাই সরকার দলীয় লোক। তাদের পারসোনাল একটা ক্ষমতা আছে। সেই ক্ষমতার বলে তারা অনেক প্রতিশ্রুতিই পূরণ করতে পারবে।
এদিকে দীর্ঘদিন রাজধানীবাসী তার নগরপিতা অভাব হারে হারে বুঝতে পেরেছে। তাই প্রথম থেকে ইশতেহারের থাকা প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ হবে তা নিয়ে ব্যস্ত নগরবাসী। আর নগরবাসীর এই চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মিলাতে পারলেই তারা হবেন যোগ্য নগরপিতা এমনই গুনজন চলছে পাড়া মহলার
Leave a Reply